কবরের ভূত !

বিল্লাল হোসাইন

রহিম চাচা জমিতে পানি নেওয়ার জন্য রাতের আধারে বাড়ীর বাহিরে গেল। হাতে লাইট নিয়ে মেশিন ঘরের দিকে যাচ্ছে মাঝ খানে অনেক ভয়ংকর পথ দিয়ে যেতে হয়, চার দিকে শন শন করে, ঘুট ঘুটে কালো অন্ধকার। কোথাও কোন আলো নাই কারো কোন শব্দ নাই সবাই গভির ঘুমে আচ্ছন্ন। পাখি গুলো আর কিচির মিচির করে না, সবাই চলে গেছে যার যার নীড়ে। রহিম চাচা তার জমিতে পানি নেওয়ার জন্য মাঝে মাঝেই রাতের বেলা এই অন্ধকার রাতে একাই বাড়ী থেকে বের হন।

কোন দিন কোন কিছু দেখেন নি কোন ভয় পান নি,আজও রহিম চাচা একাই, তবে রহিম চাচার অনেক সাহস বয়স ও কম না প্রায় ৬০ বছর। চাচা ছোট খাট কোন কিছু দেখে ভয় পায় না সে যে জমিতে পানি নিতে যাবে সেখানে যেতে অনেক জঙ্গল এর মধ্য রাস্তা দিয়া যেতে হয়। রাস্তার আশে পাশে নতুন পুরাতুন অনেক কবর আছে রহিম চাচা গুন গুন করে কি যেন গাইতে গাইতে যাচ্ছে পাশের উচা জন্গল ভিটায় অনেক দিনের পুরাতুন কবর থেকে ধপ ধপ, মর মর, কর কর, শব্দ হচ্ছে।

মনে হচ্ছে কয়েকজন মিলে মারামারি করতেছে রহিম চাচা কখনও এরকম শব্দ শোনে নি আজ শুনে তার গাঁ টা ছম ছম করে উঠলো, লোম গুলো দাড়িয়ে গেল, মাথার চুল গুলো খাড়া হয়ে গেল। বুকটা ধরপর ধরপর শুরু করলো, সে দৌড় দিয়ে মেশিন ঘরের সামনে গিয়ে অচেতন হয়ে পরে গেল। মেশিন ঘরে ছিল আবুল চাচা জমিতে পানি দেওয়া সহ মেশিন পাহাড়া দেওয়া তার কাজ আবুল চাচা রহিম চাচা কে ঘরে নিয়ে চেতন করল রহিম চাচা চেতন হয়ে সব খুলে বলল। আজ আর জমিতে পানি নিবে না রহিম চাচা, কিছু সময় এখানে ঝিম লেগে বসে থাকল।

আবুল চাচা কে বলল আমাকে বাড়ীতে দিয়ে আয়, আবুল চাচা রাজি হলো মেশিন ঘর বন্ধ করে রহিম চাচাকে নিয়ে বাড়ীতে দিতে যায়। আবার সেই একই পথ দিয়ে যেতে হবে রহিম চাচা বলল জমির আইল দিয়ে যাই এই পথে আর যাব না, কিন্তু আবুল চাচা বলল আমি আছি কিছু হবে না চল। দু’জন চলল ঐ পথে চলতে চলতে সামনে ঐ ভয়ংকর জায়গা চলে আসছে প্রায় ২০০ গজ পথ দুই পাশে ঘন জঙ্গল, কালো ঘোর অন্ধকার, দু’জন দোয়া পড়তে পড়তে আসতেছে।

কথায় আছে “যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়” ঐ জায়গায় এসে দু’জনের চোখ ঐ কবরের দিকে যায় হঠাৎ দেখে সাদা কাপড় পরা ভয়ংকর চেহারার দু’জন তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে দু’জন এর বুকের ভিতর ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেল তারা দু’জন দু’জকে শক্ত করে চেপে ধরল তারা কি করবে বুঝতে পারছে না। রহিম চাচাতো ভয়ে শেষ, আবুল চাচারো একই অবস্থা তারা দৌড় দেওয়ার জন্য ভাবতেছে। তারা একপা সামনে গেলে ওরাও একবার সামনে লাফ দিয়ে এগিয়ে আসে দুপা গেলে ওরাও দুবার সামনে লাভ দিয়ে আসে।

এবার তারা চোখ বন্ধ করে কোন মতে দেখার মত চোখ খুলে দে দৌড়৷ তাদের পিছে পিছে সাদা কাপড় পরে ভূত গুলো তাদের বাড়ীর অনেক কাছে আসে, তারা দু’জন এক দৌড়ে বাড়ীতে এসে অনেক জোরে ডাক দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেল। বাড়ীর মানুষের শব্দ পেয়ে ভূত দুইটা পালিয়ে যায়।