গ্রামের এক স্কুল পরিদর্শনে ঢাকা থেকে পরিদর্শক এসেছেন।
তিনি নবম শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করা মাত্র ক্লাস শিক্ষক দাঁড়িয়ে গেলেন।
পরিদর্শক এক ছাত্রকে প্রশ্ন করলেন, ‘বলোতো, আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি কে ?’
ছাত্র, ‘শেখ হাসিনা, স্যার।’
পরিদর্শক, ‘আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করছি প্রেসিডেন্ট কে?’
ছাত্র, ‘ফেসিডেন্ট, খালেদা জিয়া।’
পরিদর্শক রেগেমেগে বললেন, ‘তুমি ক্লাস নাইনে উঠলা ক্যামনে? আমি তোমার নাম কেটে দিবো।’
ছাত্র, ‘আমারতো স্কুলের খাতায় নামই নাই, আফনি নাম কাটবেন ক্যামনে?’
পরিদর্শক, ‘তার মানে?’
ছাত্র, ‘আমি স্কুলের মাঠে ছাগল নিয়ে আইছিলাম, স্যারে কইলো, তোরে বিশ ট্যাকা দিমু, তুই ক্লাসে বইবি।’
খুব রেগে গিয়ে পরিদর্শক শ্রেণী শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘ছিঃ মাস্টার সাহেব, আপনাদের লজ্জা করে না? শিক্ষা নিয়ে ব্যাবসা! আমি আপনার চাকুরী খেয়ে ফেলবো।’
ক্লাস শিক্ষক বললেন, ‘কাকে ভয় দেখান, আমি মাস্টার না, সামনে মুদি দোকানটা আমার, মাস্টার সাহেব আমারে কইলো শহর থেকে এক বেডা অাইবো,
আমি একটু হাটে গেলাম, তুই একটু ক্লাস ঘরে বইয়া থাকবি।’
পরিদর্শক আরও রেগে হেড স্যারের রুমে গিয়ে বললেন, ‘আপনি হেড স্যার?’
প্রধান শিক্ষক বললেন, ‘জ্বী বলুন, কোন সমস্যা?’
পরিদর্শক রাগত স্বরে বললেন, ‘আপনাদের লজ্জা করে না, নকল ছাত্র-শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালান?’
প্রধান শিক্ষকের আসনে বসা লোকটি বললেন,
‘দেখুন আমার মামা এই স্কুলের হেড স্যার, উনি জমি বেচা-কেনার দালালি করেন, কাস্টমার নিয়া অন্য গ্রামে গেছেন, আমারে কইলো পরিদর্শক আইলে তার হাতে এই টাকার বান্ডেলটা দিয়া দিস …..।’
পরিদর্শক তৎক্ষনাত টাকাটা হাতে নিয়ে পকেটে ভরে বললো, এই যাত্রায় আপনারাও বেঁচে গেলেন। আসলে আমার মামা হলেন পরিদর্শক। তিনি ঠিকাদারির কাজও করেন, টেন্ডার সাবমিট করতে সিটি কর্পোরেশনে গেছেন। আমাকে বললো তুই আমার হয়ে পরিদর্শন করে আয়…।’
কোনও এক দেশের সার্বিক পরিস্থিতি যদি এমন হয়, আর কিছু চাটুকার আমলা, নেতা সে দেশকে হুদাই ‘উন্নয়নের মহাসড়ক’ বলে যদি গলা ফাঁটান তবে সেই মহাসড়কের সত্যিকার কি অবস্থা হতে পারে আশা করি কারও বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। অসহায় গরীব দুস্থ মানুষের সাহায্য মেরে খাওয়া নেতা,মন্ত্রী, আমলাদের গলার জোর আজ অনেক বেশি! দুর্নীতিবাজ, ঘুষ বাণিজ্যের হোতা উর্ধতন কর্মকর্তারাদের দাপটে সৎ লোকদের অসহায় অবস্থা!
যে অফিসে বড় বড় অক্ষরে লেখা থাকে- ‘আমি ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত’
সেই অফিসেই দেখেছি গোপনে চলে ঘুষ- দুর্নীতি বানিজ্য!
কবি লিখেছিলেন-
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন
‘মানুষ হইতে হবে’ – এই যার পণ৷
বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান
নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংস, প্রাণ?
হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?
চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়?
সে ছেলে কে চায় বল, কথায় কথায়
আসে যার চোখেজল, মাথা ঘুরে যায়?
মনে প্রাণে খাট সবে, শক্তি কর দান,
তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ৷