তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক গৃহকর্মী কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণের মামলায় বিবেক বালা (৩৮) নামে ওষুধ কোম্পানীর এক রিপ্রেজেন্টিটিভকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ভোররাতে বোয়ালমারী পৌরসদরের কলেজ রোড এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ওই কিশোরীর একটি স্যালোয়ার (জামা) উদ্ধার করেছে পুলিশ। আসামীকে শুক্রবার বিকেলে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষিতার বাবা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) ধারায় বিবেক বালাকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ২২। শনিবার কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক বিবেক বালা পাশ্ববর্তী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের বিনয় কৃষ্ণ বাংলার ছেলে। ভেটেরিনারি বিভাগের ওষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিটিভে চাকরির সুবাদে বিবেক বালা স্ত্রীকে নিয়ে বোয়ালমারী সরকারি কলেজ রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। তার স্ত্রী মৃদুলা বৈরাগী বোয়ালমারী সরকারি হাসপাতালে সেবিকা (নার্স) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ধর্ষিতা কিশোরী তাদের বাসায় গত দুই বছর ধরে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে আসছে।

গত ২৫ ডিসেম্বরের ধর্ষক বিবেক বালার স্ত্রী বাসায় না থাকার সুযোগে দুপুরে ঘুমন্ত অবস্থায় সঙ্গীতার উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং গলাটিপে ধরে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। এ ঘটনার দুইদিন পর ধর্ষিতা ভয়ে বাসা থেকে পালিয়ে নিজবাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসা উপজেলার ঘুংগিয়াকুল গ্রামে গিয়ে মা-বাবার কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষিতার বাবা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) ধারায় বিবেক বালাকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ২২।

মামলার আসামিকে গত শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ। মামলার আগে বিষয়টিকে ধাপা চাপা দিতে বিবেক বালা তার মামা শ্বশুর কৃষ্ণ বাইনকে দিয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি ধমকিসহ বিভিন্ন ভাবে দেন দরবার করেন বলে ধর্ষিতার বাবা বিশ্বজিৎ জানায়।

গত শনিবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক আক্কাস আলী শেখ জানান, আসামীকে আমরা তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আমি নিজেই নিয়ে এসেছি। মেডিকেলের অনস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা শেষে তার জবানবন্দি নেওয়া হবে।