স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে উচাইল শাহী মসজিদ। যেটাকে আবার অনেকেই ‘গায়েবি মসজিদ’ আবার ‘লালটিলা মসজিদ’ হিসেবেও বলে থাকেন। সুলতানি আমলের শত-শত বছরের পুরোনো মসজিদটি যেন উচাইলবাসির কাছে এক ঐতিহ্যের প্রতীক। মসজিদটির অবস্থান হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল শংকরপাশা গ্রামে। চমৎকার কারুকাজ আর নির্মাণশৈলী নিয়ে প্রায় ৬ একর জমির উপর মসজিদ, দিঘি আর কবরস্থান রয়েছে।

গায়েবী দিঘি মসজিদ বাংলাদেশের সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার বারঠাকুরী ইউনিয়নে অবস্থিত একটি অতি প্রাচীন মসজিদ। এটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নথিভূক্ত একটি স্থাপনা। এখানে ৪০০ বছরের পুরাতন পাথরের শিলালিপি পাওয়া গেছে, যা বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘরে রাখা আছে। পাথরের শিলালিপি থেকে ধারণা করা হয় এটি ১৭ শতকে নির্মিত হয়েছিল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উন্নতমানের প্রলেপহীন পোড়া ইট কেটে সেঁটে দেওয়া হয়েছে ইমারতে। দেয়ালের বাইরের অংশে পোড়া ইটের ওপর বিভিন্ন নকশা এবং অলঙ্করণ সহজেই মুসল্লি ও দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মসজিদটি লাল বা রক্তিম বলে অনেকে ‘লাল মসজিদ’ বলে থাকেন। আর এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলো থেকে শত-শত মানুষ সেখানে ভীড় জমায়। অনেককেই আবার সেখানে গিয়ে জিকির আসকার ও মোনাজাত করতে দেখা গেছে।

১৫১৩ সালে মসজিদটি নির্মাণ করেন শাহ মজলিশ আমিন (রা.)। পরবর্তীতে মসজিদের সুদৃশ্য ইমারত বা ভবন নির্মাণ করা হয় সুলতান আলাউদ্দিন হোসাইন শাহের আমলে। ইমারতটির দৈর্ঘ ও প্রস্থ একই মাপের (২১ ফুট ৬ ইঞ্চি)। বারান্দা ৩ ফুটের সামান্য বেশি। একে অনেক সময় চার গম্বুজ মসজিদও বলা হয়। কেননা মূল বা আসল ভবনের ওপর একটি বড় বা বিশাল গম্বুজ এবং বারান্দার ওপর দেখতে পাওয়া যায় তিনটি ছোট গম্বুজ। দরজা-জানালা আছে প্রায় ১৫টি। দরজা ও জানালা প্রায়সবগুলো একই আকৃতির। সব দিকের দেয়ালের পুরুত্বই বেশি।

 

তিন দিকের পুরুত্ব প্রায় ৫ ফুট। পশ্চিম দিকের দেয়ালের পুরুত্ব এর প্রায় দ্বিগুণ বা প্রায় ১০ ফুট। মোট ৬টি কারুকার্য শোভিত স্তম্ভ আছে প্রধান কক্ষের চার কোণে ও বারান্দার দুই কোণে। উপরের ছাদ আর প্রধান প্রাচীরের কার্নিশ নির্মাণ করা হয়েছে বাঁকানোভাবে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে বড় দীঘি। এটি মসজিদটির সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্মীয় বিশেষ দিনগুলোতে এখানে বেশি ভিড় হয়। তবে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শত-শত বছরের পুরোনো মসজিদটি এখন ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

 

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া