করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আগামী ৪৮ ঘন্টায় কোন জ্বর না আসলে অনেকটা আশঙ্কামুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
তার জন্য গঠিত ৪ সদস্যের চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে খালেদা জিয়ার কোন জ্বর আসেনি। এটা খুবই ভালো লক্ষণ।
রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তিনি এসব কথা বলেন।
রাত সোয়া নয়টা থেকে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা দেখে ডা. এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, আজ
(রোববার) খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার দশম দিন। এই সময়টা করোনা রোগীর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বা বিপজ্জনক বলা হয়। এখন খালেদা জিয়া করোনার বিপদজ্জনক সময় পার করছেন। তারপরও তার যে শরীরের অবস্থা তা মোটামুটি খুব ভালো।
খালেদা জিয়া মানসিকভাবে খুবই শক্ত আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে তিনি বলেন।
এই চিকিৎসক জানান, গত তিন দিন থেকে বেগম জিয়ার গায়ে সামান্য জ্বর উঠানামা করছিল। আজ সারাদিন তার কোন জ্বর নেই। আগামী ৪৮ ঘন্টা এ অবস্থা বিরাজ করলে বলতে পারব— আমরা একটা নিরাপদ জোনে চলে আসছি। আমরা তার শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছি। তার ব্লাড সুগারসহ অন্যান্য যেসব প্যারামিটার রয়েছে সেগুলো ঠিক আছে। তার কাশি নেই, গলা ব্যাথা নেই। তার সবকিছু এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।
হাসপাতালে নেওয়া বা কোনো ধরনের পরীক্ষা করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব পরীক্ষা করিয়েছি। তার সবগুলো রিপোর্টই ভালো এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা খালেদা জিয়া নির্দ্বিধায় আমাদের সাথে কো-অপারেশন করছেন।
এসময় তার সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাকুর খান, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
রাত সাড়ে নয়টায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন টেকনোলজিস্ট খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজায় প্রবেশ করেন। তিনিও প্রায় দুই ঘন্টা সেখানে অবস্থান করেন।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীরে নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু করে।
‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরো ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও সেখানে চলছে।
৫ বছ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যেতে হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়।
পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির সময় আরও ছয় মাস বাড়ায় সরকার। এ বছরের মার্চে দ্বিতীয় বারের মতো ছয় মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।