সন্ধ্যা ৬টা ২১ মিনিট। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয় থেকে দলটির নেতা–কর্মীদের আটক করে প্রিজনভ্যানে তুলছিলেন পুলিশ সদস্যরা। কয়েকজন নারীকেও তোলা হচ্ছিল প্রিজনভ্যানে। তাঁদের মধ্যে এক নারীর সঙ্গে ছিল একটি শিশু। এ সময় ওই নারী শিশুটিকে নিজের সন্তান বলে পরিচয় দেন। চিৎকার করে বলেন, ‘আমার বাচ্চাটাকে ছেড়ে দিন ভাই। কাল ছেলেটার পরীক্ষা। সে মনিপুর স্কুলে পড়ে। তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে।’ পরে প্রিজনভ্যানটি নয়াপল্টন থেকে নিয়ে যায় পুলিশ।
বুধবার বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষে এ পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন। পরে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। সেখান থেকে দলটির কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চলে পুলিশের আটক অভিযান। পুলিশ কার্যালয়ের ভেতরে তল্লাশি চালায়, যা শেষ হয় রাত নয়টায়। এরপর ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নয়াপল্টনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এই অভিযানে ৩০০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নয়াপল্টনে নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা, গুলি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারা দেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। স্বামীর মৃত্যুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্তান কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী হালিমা বেগম নয়াপল্টনে নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল আহমেদ। তাঁর বাসা ঢাকার মিরপুরের বাউনিয়া বাঁধ এলাকায়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া একজন সাংবাদিকও আহত হন বলে জানা গেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নয়াপল্টনে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।