জসিম উদ্দিন;খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ বিয়ের দাবিতে চার দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছিলেন কলেজছাত্রী পলাশী রায়। অনড় মনোভাব নিয়ে অনশন করে চলেছিলেন।

নানা চাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি তার দাবি থেকে সরে আসেননি। নানা নাটকীয়তার মধ্যে অবশেষে ১৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় সমাপ্তি ঘটে অনশনের বিয়ে হয় দুজনের। বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বাবুল।

ঘটনাটি ঘটেছে, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের খামার বিষ্ণুগঞ্জ গ্রামে। প্রেমিক শুভ ওই গ্রামের নাপিত পাড়ার মানিক রায়ের ছেলে এবং প্রেমিকা পলাশী একই ইউনিয়নের টংগুয়া শাহ্ পাড়া এলাকার অরুনা রায়ের মেয়ে ও ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্রী।

জানা গেছে, দুই বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রমাণস্বরূপ প্রেমিকার কাছে ছিল মোবাইলে পাঠানো প্রেমিকের অনেক এসএমএস। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১ বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক করেছে প্রেমিক। সম্প্রতি বিষয়টি উভয়ের পরিবার জেনে যায়। পরিবার থেকে বিয়ের কথা বললে ছেলেপক্ষ যৌতুকের দাবি হিসেবে ৫ লাখ টাকা চায়।

পরিবার থেকে এত টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে গোপনে প্রেমিক শুভ’র অন্য জায়গায় বিয়ের আয়োজন করে। সেই খবর শুনে বাধ্য হয়ে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে প্রেমিকের বাড়িতে।

এর আগে অনশনকারী কলেজছাত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রেমিক শুভ বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করব। শুভ’র সঙ্গে তার দুই বছর আগের প্রেম। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে এক বছর থেকে তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। সম্প্রতি শুভ কে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিষয়টি উভয়ের পরিবার জেনে যায়।

কিন্তু শুভ’র পরিবার অন্য জায়গায় তার বিয়ে ঠিক করে। তাই বাধ্য হয়ে প্রেমিকা অনশন শুরু করে। হয় বিয়ে, না হয় আত্মহত্যা- এমন সিদ্ধান্ত অনড় রেখে প্রেমিকের বাড়িতে চলছিল তার অনশন। এদিকে প্রেমিকার উপস্থিতির টের পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান রসিক প্রেমিক শুভ।

এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় গণমাধমে প্রকাশসহ সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর টনক নড়ে অনেকের। অবশেষে ৯০ ঘন্টা (চারদিন) অনশনের পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দুই পরিবারের অভিভাবকদের সম্মতিতে প্রেমিক জুটির বিয়ের সিদ্ধান্তে কাবিননামা সম্পাদন করা হয়।