খান মোঃ কামরুল|যশোর অভয়নগর প্রতিনিধি

অভয়নগর উপজেলার ৫নং শ্রীধরপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম থেকে শুরু হয়ে কামকুল বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রাস্তাটির কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, ১ কিলোমিটার রাস্তার কাজে ওয়ার্ক অর্ডারে ১২ ফিট চওড়া রাস্তা থাকার কথা থাকলেও সেখানে ১০ ফিট চওড়া করা হয়েছে। এছাড়া গভীরতা সাফবেস ও ম্যাগাডামসহ ২২ ইঞ্চি পযর্ন্ত দেয়ার কথা থাকলেও তার চাইতে কম দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি দিয়ে কাজ করা হয়েছে।

এলাবাসীরা জানায়, বনগ্রাম থেকে শুরু হয়ে কামকুল বাজার আমাদের এই রাস্তাটি যে ভাবে কাজ করার কথা আছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সে ভাবে কাজ করছে না ।

এ নিয়ে উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ মনজুরুল হক এর নিকট কাজ ঠিক হচ্ছেনা এমন প্রশ্নে তোলেন এলাকাবাসী । তখন তিনি তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। কোন ভুল হচ্ছে না। এখন কাজ নিয়ে কোন বাধা দিয়েন না । ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কিছু কাজ করুক তার পরে বাধা দিয়েন তাহলে কাজ না করে পার পাবেনা। এখন বাধা দিলে তারা কাজ না করে চলে যেতে পারে।

স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুর রহমান সরদার বলেন, আমি বনগ্রাম রাস্তা মাপ দিয়ে পাই ১০ ফিট যেখানে ১২ ফিট দেয়ার কথা আছে। সিডিউলে যা আছে তারা তা করছে না। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সানভিক এন্টারপ্রাইজ এর ক্রয়ক্রত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরদার এন্টারপ্রাইজের রফিকুল ইসলাম। তিনি শুরুতেই নিম্নমানের ইট, খোয়া,বালি দিয়ে কাজ করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন সুমন, আনছার মোল্যা, ফিরোজ মোল্যা, নবুয়াত মিনা, রবিউল মোল্যা, হারিয়াছ সরদার, মোফাসের সরদার, মোঃ আলামিন, জিয়াউর রহমান, শান্টু মিনা বলেন, আমাদের ১ কিলোমিটার রাস্তার কাজে ওয়ার্ক অর্ডারে ১২ ফিট রাস্তা থাকলেও সেখানে ১০ ফিট চওড়া করা হয়েছে, যেখানে গভীরতা সাফবেস ও ম্যাগাডাম ২২ ইঞ্চি পযর্ন্ত দেয়ার কথা থাকলেও তার চাইতে কম দেয়া হয়েছে। দায়সারা কাজ করছে তারা।

সরেজমিনে ঘরে, বিভিন্ন স্থানে এই কাজ মাপ দিয়ে চওড়া ১০ ফিট পওয়া যায়, গভীরতা যা থাকার কথা তার চেয়ে কম পাওয়া যায় এবং নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করার সত্যতাও মিলেছে। পথচারীরা জানান, আমরা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ করতে নিষেধ করেছি । কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করেনি। সাংবাদিক আসার কথা শুনে রাস্তার পাশে আবার নতুন করে খোড়া হচ্ছে। আমাদের দাবী একটাই যাতে রাস্তাটির কাজ সুন্দর হয়। তাছাড়া খারাপ ইটগুলোকে সরিয়ে ভালো ইট, বালু ও খোয়ার পরিমান সঠিক দিয়ে রাস্তার কাজ করা হোক।

রাস্তা নির্মাণের কাজ করা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সহকারি মোঃ আবু সাইদ জানান, আমি কাজের সিডিউল দেখি নাই। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মনজুরুল হক যে ভাবে বলেছেন আমি সে ভাবে রাস্তার কাজ করছি। ঠিকাদার সরদার এন্টারপ্রাইজের রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৭১৬৯৭২২৬০) এ নম্বরে কয়েক দিন যাবত কল দিলে তার বাড়ি অন্য সদস্যরা ফোন ধরেন।

অভয়নগর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মনজুরুল হক’র কাছে এ বিষয়ে জানতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভুল করেছে। আমারও বোঝার ভুল হয়েছে এটা প্রথমে ভেবে ছিলাম ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা। পরে দেখি এটা উপজেলা পরিষদের রাস্তা। নিয়মে আছে উপজেলা পরিষদের রাস্তা ১২ ফুট চওড়া হতে হবে। আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কে রাস্তার ওয়ার্ক ওয়ার্ডার অনুযায়ী করার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা মানুষ তাই আমাদের ভুল হতেই পারে আমাকে ৫দিনের সময় দেন আমি সবঠিক করে দিচ্ছি। কিছু দিন পরে আপনাদের (সাংবাদিক) ভাইদের নিয়ে রাস্তা পরির্দশনে যাবো। কিছু দিনের মধ্যে রাস্তাটি ১২ ফুট চওড়া পাবেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর জানান, রাস্তার কাজের ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী যাতে সঠিকভাবে করা হয় সেজন্য উপজেলা প্রকৌশলি অফিসকে নির্দেশ দেওয়া আছে। কাজের কোয়ালিটিতে কোন আপোস করা হবে না। রাস্তাটি ইউনিয়নের জনগণের চলাচলে অনেক সুবিধা হবে ।