যশোরের কেশবপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২২ পালন উপলক্ষে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর (বুধবার) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় চত্বরে ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন সভাপতিত্ব করেন।অনুষ্ঠানে কেশবপুর উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার শোভা রায় এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে শহিদদের স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম খোকন, কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ আসাদুজ্জামান, কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান।
এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে হানাদার বাহিনীর হাতে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টর্চার সেলে নির্যাতনে আক্রান্ত হওয়া মোঃ মোসলেম উদ্দিন ও কৃষ্ণপদ দাস। স্বাধীনতাযুদ্ধে শহিদদের স্মৃতিচারণ করে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র যখন বুঝতে পারে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, পরাজয় অনিবার্য। তখন তারা এ দেশের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে।
আরোও পড়ুন:
বোয়ালমারী থানার দুই এসআই সড়ক দুঘর্টনায় আহত
যশোরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন বিটিএস তারকা জিন
যথাযোগ্য মর্যাদায় রাবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতিকে মেধাশূন্য করতে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধারে পাকিস্তানি বাহিনী, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর ও আল শামসরা অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের মাধ্যমে আজকের তরুণ প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে হবে। সেক্ষেত্রে আগামীর প্রজন্মরা উদ্বুদ্ধ এবং অনুপ্রাণিত হয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শকে অনুসরণ করে দুর্নীতিমুক্ত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলে মুক্তিযুদ্ধে সকল বুদ্ধিজীবী শহিদদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।
আলোচনা সভা শেষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে হানাদার বাহিনীর হাতে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টর্চার সেলে ৬ জন নির্যাতন হওয়া ব্যক্তির হাতে শান্তনা পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন।
তারা হলেন, মজিদপুর গ্রামের মো: আব্দুল মজিদ (বড় ভাই), ঘাঘা গ্রামের মো: মোসলেম উদ্দীন, কন্দর্পপুর গ্রামের মো: আবু তালেব, বারুইহাটি গ্রামের কৃষ্ণপদ দাস, একই গ্রামের শিবুপদ দাস ও গৌর চন্দ্র বিশ্বাস।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার সজীব সাহা, উপজেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডু, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ তোরাবুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আব্দুস সামাদ, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ দাশ, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা কেশবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শামীম আখতার মুকুল, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস আর সাঈদ, ওয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আকমাল আলী, সাংবাদিক কামরুজ্জামান রাজু, অলিয়ার রহমানসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।