দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে ক্ষুর্ধাত শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সম্প্রতি প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর শিয়াল লোকালয়ে ঢুকে হাঁস-মুরগি ধরে খাওয়ার পাশাপাশি পথচারীকে কামড়ে দিচ্ছে।

এ ছাড়াও গত ৩ মাসে ১০-১২ জন পথচারী শিয়ালের কামড় খেয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসা নেয়ার জন্য ভর্তি হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে করে প্রত্যন্ত খানসামা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের মধ্যে শিয়াল-আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা গেছে, খানসামা উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ব্যাপকহারে ভূট্টা চাষাবাদের জন্য গত ৩ থেকে ৪ মাসে শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে গেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে সন্ধ্যার পরপরই ঝোপঝাড় থেকে হাঁক- ডাক দিয়ে শিয়াল দল বেঁধে বের হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।আর সে কারণেই শিয়ালের সাথে মোটরসাইকেল চালকের একাধিকবার ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।

খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়ন এলাকার বাসিন্দা ওবাইদুর (৩৩) জানান, ক্ষুধার্ত শিয়ালগুলো বাসা-বাড়িতে ঢুকে হাঁস-মুরগি ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সন্ধ্যার পরপরই গ্রামের কৃষকেরা তাদের হাঁস-মুরগির খোঁয়াড় (ঘর) আটকিয়ে রাখছেন। তারপরও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগি ধরে নিয়ে যাচ্ছে এরা।

তিনি আরও জানান, আগেও শিয়ালের উপদ্রব ছিল। তবে এখন উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গা পাড়া গ্রামের এক গৃহীণি জানায়, ভূট্টা রোপনের আগে শিয়ালের উৎপাত ছিল না। কিন্তু ভূট্টার ক্ষেত যত বড় হতে শুরু করেছে তত শিয়ালের উৎপাত শুরু হয়েছে। এখন মুরগি হাঁস দিনে দুপুরে শিয়াল মুখে নিয়ে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে খেয়ে ফেলছে।

এছাড়াও খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্যকম্প্লেক্স এর জরুরি বিভাগের কর্মরত ওয়ার্ড বয় মোকাররম হোসেন ও হাফিজ উদ্দিনের মাধ্যমে জানা যায়, গত তিন মাসে শিয়ালের সাথে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনা প্রায় ১০-১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়।

তবে বেশিভাগ দূঘর্টনাই রোগীর অবস্থা ছিল বেগতিক। এবং সেগুলো আশংকাজনক অবস্থায় থাকার কারণে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই দিনাজপুর আ: রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। এবং শিয়ালে কামড়িয়েছে এমন ১০০ জনের মতো আমাদের ইমার্জেন্সি রুমে এসেছিল। যার ভ্যাকসিন তারা পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারী থেকে নিয়েছে। আপনারা সেখানে গেলে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, কাউকে শিয়াল কামড়ে দিলে প্রথমত কামড় দেয়া সেই সেই ক্ষত স্থানে কাপড় কাঁচার সাবান দিয়ে ১০ মিনিট ধরে প্রচুর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং পরবর্তীতে সেই ব্যক্তিকে তার নিকটস্থ নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিষেধক টীকা নিতে হবে।